হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের উচাইল-চারিনাও গ্রামের ফহিমা খাতুন স্বামী-সংসার ও তিন সন্তানের জননী হওয়া সত্ত্বেও পরকীয়া করে প্রেমিকের সঙ্গে নতুন করে ঘর বাঁধতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় তারই ঔরসজাত তিন শিশু সন্তান। তাই সন্তানদের বিষ খাইয়ে হত্যা করে সেই পথ পরিস্কার করতে চেয়েছিলেন পাষন্ড মা ফাহিমা। তিন শিশু সন্তানকে জুসের সঙ্গে কৌশলে বিষপান করানোর ফলে একজন শিশু মারা যায়। বাকি দুজন শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।মর্মান্তিক এই দূর্ঘটনা ঘটেছে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের উচাইল-চারিনাও গ্রামে।
মঙ্গলবার (০১ ডিসেম্বর, ২০২০) ১৬৪ ধারানুযায়ী হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন ফাহিমা খাতুন। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান শেষ হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। একইদিন নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, দীর্ঘদিন যাবত হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের উচাইল-চারিনাও গ্রামের এক ইজিবাইক চালক সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী ফাহিমা খাতুন। তার সঙ্গে পাশের বাড়ির আক্তার মিয়ার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিলো। পরকিয়ার এক পর্যায়ে তারা পুরনো সংসার ফেলে নতুন ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু ফাহিমার তিন শিশু সন্তান এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
গত ১৮ নভেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যায় বাড়ির পার্শ্ববর্তী দোকান হতে ফাহিমা ২টি লিচুর জুস কিনে এনে প্রেমিক আক্তার মিয়ার হাতে দেন। এরপর আক্তার মিয়া সেই জুসে বিষ মিশ্রিত করেন। এর পরেই আক্তার মিয়া ও ফাহিমা খাতুন তিন শিশু সন্তানকে উঠোন থেকে ডেকে এনে জুস খাওয়ান। জুস খাওয়ার কিছু সময় পরই বিষক্রিয়ায় ফাহিমার ৩ শিশু সন্তান ছটফট করতে থাকে।
পরে খবর পেয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় তিন শিশুকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে সাত বছরের মেয়ে সাথী আক্তারকে তাৎক্ষণিকভাবে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। অপর দুই সন্তান তোফাজ্জল ইসলাম ও রবিউল ইসলামকে সিলেট ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়।
এরপরই পাষন্ড মা ফাহিমা ও প্রতিবেশী আক্তারের পরকীয়া প্রেমের বিষয়টি প্রকাশ হয়। এ ঘটনায় ফাহিমার স্বামী সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে স্ত্রী ফাহিমাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
(তথ্যসূত্রঃ)